আমুদরিয়া নিউজ : আল আমিন মিশনের নাম এখন প্রায় সকলেই জানেন। এবার এই মিশন থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়া ৪৭২ জন ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চান্স পেয়েছে। যাঁরা নিট, আন্ডার গ্র্যাজুয়েট পরীক্ষায় পাস করেছেন, তাঁদের মধ্যে মালদহের ৭৭ জন রয়েছেন। মুর্শিদাবাদের ১৫৪ জন। এঁরা সকলেই ৫০০ নম্বরের বেশি পেয়ে নিটে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এই ৪৭২ জনই রাজ্যের সরকারি মেডিকেল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বিনাম খরচে পড়াশোনা করতে পারবেন।
আসুন, যাঁরা সুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা কেমন পরিবার থেকে উঠে এসেছেন দেখা যাক। মোট ৪৭২ জনের মধ্যে ২৭৮ জনের পরিবারের অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত। সাধারণ পরিবার। যা কি না মোট সুযোগ পাওয়াদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ। ১৯৪ জন মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছে।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল, এই যাঁরা সুযোগ পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১২৬ জন হলেন দরিদ্র ও অতি দরিদ্র পরিবারের সদস্য-সদস্যা। অর্থাৎ নিটে আল আমিন মিশনের ৫০০ নম্বরের বেশি পাওয়াদের মধ্যে ২৭% বি পি এল তালিকা ভুক্ত পরিবারের।
পিছিয়ে পড়া সংখ্যালঘু শ্রেণির পড়ুয়াদের সর্বভারতীয় পরীক্ষার জন্য বছরের পর বছর ধরে যে প্রতিষ্ঠান কাজ করছে তাঁর কর্ণধার ও সাধারণ সম্পাদক এম নুরুল ইসলাম সম্পর্কে কিছু কথা বলা যাক। তিনি পশ্চিমবঙ্গের স্যার সৈয়দ নামে পরিচিত। এম নুরুল ইসলাম ১০০ জন প্রভাবশালী ভারতীয় মুসলিমের তালিকায় স্থান পেয়েছেন।
তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ ও মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে একটি হস্টেল চালু করেন। সেখানে মাত্র ৭ জন পড়ুয়াকে পান। হস্টেল চালানোর জন্য বাড়ি বাড়ি থেকে চাল সংগ্রহ করেছেন। পরের বছর এটি আল আমিন মিশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই মিশনের এখন পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলায় ৭৭টি শাখা রয়েছে।
যেখানে প্রায় ২৩,০০০ আবাসিক শিক্ষার্থী থাকে। আল আমিন মিশন থেকে ৪৯,০০০ এরও বেশি শিক্ষার্থী পাস করেছে। যাঁরা পশ্চিমবঙ্গের পাঠক্রম, কেন্দ্রীয় সি বি এস ই পাঠক্রমেও পড়াশোনা করেছে ও করছে। ২০১৫ সালে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার শিক্ষায় অবদানের জন্য এম নুরুল ইসলামকে বঙ্গভূষণ পুরস্কারে সম্মানিত করে।
এম নুরুল ইসলামের জন্ম, ১৯৫৯ সালে হাওড়া জেলার খালাতপুর। তিনি একটি সাধারণ পরিবারে জন্মেছেন। শিক্ষা এবং সমাজসেবার প্রতি তাঁর আগ্রহ থেকেই নিজে ছাত্র থাকার সময়েই হস্টেল চালু করেন।
এখন এই মিশনটি দাতব্য কাজেও যুক্ত। বেকার মুসলমানদের আর্থিক সহায়তা এবং বৃত্তি প্রদান করে। এটি শত শত সফল NEET এবং JEE প্রার্থী তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীদের জীবন বদলে দিয়েছে।