আমুদরিয়া নিউজ: এ হল আমাদের বর্তমানের মহানন্দা। যা আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। জল আচে, তা অনেকটাই কুচকুচে কালো, কোথাও ঘোলাজল। কোথাও কাদাজল। আর উপরি পাওনা হল কটূ গন্ধ।
ও দিকে কাটালের আবর্জনা। পশুর বিষ্ঠা, মানুষের মলমূত্র, শহরের নানা ওয়ার্ডের নিকাশি নালার জলে মিলেমিশে এ এক ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে মহানন্দা।
অথচ, ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে জানা যায়, এই মহানন্দা এমন খরস্রোতা ছিল, যে এই নদী দিয়ে ৫০০ মণ মালবোঝাই বজরা চলাচল করত। নেপালের দক্ষিণ পশ্চিম হিমালয় এর আদি উৎস। সেখান থেকে কার্শিয়াঙের মহালদিরাম দিয়ে শিলিগুড়িতে ঢুকেছে মহানন্দা।
এর পরে বিহারের পূর্ণিয়া ও মালদহ জেলার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে ভোলাহাটের কাছে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ সীমায় প্রবেশের নবাবগঞ্জ শহরকে বাঁ দিকে রেখে গোদাগাড়িতে গিয়ে গঙ্গায় পতিত হয়েছে।
ভিডিও লিংক: https://www.facebook.com/share/v/1BCeLPFXee/
এই মহানন্দা এতটা বেহাল ছিল না চার দশক আগেও। শিলিগুড়িতে যত জনবসতি বেড়েছে ততই মহানন্দার চর দখল হয়েছে। মহানন্দার ধারে গজিয়ে উঠেছে কলোনি, বস্তি। খাটালও বেড়েছে। ঈর হল নিকাশি নালার দূষিত জল প্রায় সবই ধারণ করতে হয় মহানন্দাকে।
তাই শিলিগুড়ির প্রাণকেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ যে নদী সেই মহানন্দা এখন ধুঁকছে।
মহানন্দায় ড্রেজিং করানোর কথা শোনা যায় মাঝেমধ্যেই। দুঃখের বিষয় বলুন, অথবা আশ্চর্য়ের বিষয় বলুন, আজ অবদি মহানন্দায় ড্রেজিং হয়নি।
মহানন্দাকে বাঁচাবে এমন সাধ অনেকেরই দেখা যায়। কিন্তু, যেভাবে নদীটি ক্রমশ বড মাপের নিকাশি নালায় পরিণত হচ্ছে তাতে সেই সাধ কোনদিন পূরণ হওয়া বেশ মুশকিল।
নতুন বছর আসছে। যাঁরা শিলিগুড়িকে ভালবাসেন, নদী ভালবাসেন, পরিবেশ বাঁচাতে চান। তাঁরা সকলে মিলে চাইলে কিন্তু ড্রেজিং করতে বাধ্য করা যাবে। মহানন্দার জন্য কিছু করতে হবে, উই ওয়ান্ট টু সি হ্যাপি মহানন্দা, এটাই হোক নতুন ইংরেজি বছরের প্রথম স্লোগান।