আমুদরিয়া নিউজ : আমরা সাধারণত খাবার টাটকা রাখতেই ফ্রিজ ব্যবহার করি। কিন্তু, কখনও ভেবে দেখেছেন একটা ফ্রিজ কীভাবে অভাবী মানুষদের জন্যই আশীর্বাদের মতো কাজ করে। বুঝলেন না তো? এটা এক নতুন উদ্যোগ। ভারতের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে এমন অনেক ফ্রিজ। কীভাবে এই ফ্রিজ গুলি কাজ করে জানুন তবে, ক্ষুধার্ত মানুষদের খিদে দূর করার এ এক নতুন উদ্যোগ। খাবার অপচয় করেন না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছেন। কিন্তু, সেই সব ফেলে দেওয়া খাবারই হয়ত দুজন ক্ষুধার্ত মানুষের পেট ভরাতে পারে। আর সেই ভাবনা নিয়েই এই ফ্রিজ গুলি খোলা হয়েছে। বেঁচে যাওয়া রুটি, ভাত, তরকারি(অবশ্যই পচে যায়নি এমন), বিস্কুট, কেক কিংবা কোনও ফলই হোকনা কেন আপনি ফেলে না দিয়ে এই ফ্রিজ গুলিতে রেখে যেতে পারেন। আবার ধরুন রাস্তায় যে অভাবী, অনাথ মানুষেরা থাকেন তাঁরা এই খাবার গুলো নিয়ে খেতে পারবেন। বুঝলেন তো এবার, খাবার নষ্টও হবে না আর সেই সব ক্ষুধার্তদের পেটও ভরবে। আর এই খাবার দিতে বা নিতে না লাগবে কোনও টাকা আর না কোনও টিকিট।
এবার জানুন ভারতের কোথায় কোথায় এই কমিউনিটি ফ্রিজগুলি খোলা হয়েছে,
১। কলকাতার ফুড এটিএম
কলকাতায়, রেস্তোরাঁ মালিক এবং সমাজসেবীদের একটি দল মিলে ফুড এটিএম শুরু করেছে। এটি একটি পাবলিক ফ্রিজ যেখানে রেস্টুরেন্টের ও যে কারোর ঘরের বেঁচে যাওয়া খাবার রাখা হয়। ভিড় বেশি হওয়ায় দিনে একাধিকবার এই ফ্রিজে খাবার রাখা হয়।
২। চেন্নাইয়ের আয়ামিত্তু উন্ন
নিজে খাওয়ার আগে অন্যকে দাও – এই পুরনো তামিল প্রবাদ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে, ড. ইসা ফাতিমা জেসমিন বেসান্ত নগর টেনিস ক্লাবের বাইরে একটি কমিউনিটি ফ্রিজ শুরু করেছেন। স্থানীয়রা এখানে রান্না করা খাবার, ফলমূল, এমনকি জলের বোতলও রাখেন।
৩। দিল্লির হ্যাপি ফ্রিজ
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে, ফিডিং ইন্ডিয়া আবাসিক কলোনি এবং বাজারগুলি মিলে হ্যাপি ফ্রিজ স্থাপন করেছে। স্থানীয়রা অতিরিক্ত রুটি , ভাত এবং তরকারি এখানে রাখেন। ডেলিভারি কর্মী থেকে শুরু করে ক্ষুধার্ত পথচারী কিংবা যে কেউ এখানে খাবার খেতে পারেন।
৪। গুরুগ্রামের শেয়ারিং ফ্রিজ
গুরুগ্রামে, ১০০ টিরও বেশি পরিবার শেয়ারিং ফ্রিজ উদ্যোগের অংশ। বাসিন্দারা এখানে নিয়মিতভাবে বাড়িতে রান্না করা খাবার রাখেন। অন্যদিকে অভাবীরা তাদের যা প্রয়োজন তা নিয়ে খেতে পারেন।
৫। মুম্বাইয়ের দ্য রোটি ব্যাংক
মুম্বাইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার ডি শিবানন্দন কর্তৃক শুরু করা, রোটি ব্যাংক কেবল একটি ফ্রিজ নয়। এটি একটি খাদ্য উদ্ধার অভিযান। স্বেচ্ছাসেবকরা, বাসিন্দাদের বাড়ি, ক্যাটারার, রেস্তোরাঁ এবং যে কোনও অনুষ্ঠান থেকে বেঁচে যাওয়া খাবার সংগ্রহ করে এবং শহর জুড়ে অভাবীদের মধ্যে বিতরণ করেন।
এই সকল কমিউনিটি ফ্রিজ গুলি প্রমাণ করে যে বড় সমস্যা সমাধানের জন্য সবসময় প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন শুধু একটি ফ্রিজ, ও কিছু দয়ালু যত্নশীল নাগরিকদের। কাওকে খিদার পেটে না রাখার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। আর এটা শুধু অভাবী মানুষদের সাহায্য করাই নয় বরং খাবার অপচয়ের মতো একটা বড় ভুলকেও বন্ধ করে দিচ্ছে। তাই আজ থেকে আপনিও এই উদ্যোগটি শুরু করুন। খাবার নষ্ট করার চেয়ে কয়েকজনের মুখে খাবার তুলে দেওয়া অনেক বেশি ভাল কাজ।