আমুদরিয়া নিউজ : সমাজ এগোচ্ছে, আধুনিক হচ্ছে। কিন্তু তবুও নারীদের এখনও বহু ক্ষেত্রে নানা নিয়ম মানতে হয়, নির্যাতিত হতে হয়। এখনও বহু জায়গায় নারীরা নানা বাধার মুখে পড়েন। য়েমন ইরাকে। সেখানে মেয়েদের উপরে বিধিনিষেধ চাপানোর প্রতিবাদে একটা গান করাই কাল হয়েছিল ইরানি গায়কের। ইরানের গায়ক ও সঙ্গীতশিল্পী মেহেদী ইয়াররাহি, যিনি নারীদের হিজাব খুলে ফেলার জন্য উৎসাহিত করতে একটি গান গেয়ে সারা দেশে পরিচিত হন।
কিন্তু, সে দেশের বহু মানুষ এর বিরোধিতা করতে শুরু করে। দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভের জেরে তাঁকে শাস্তি দিতে ৭৪ বার চাবুকের বাড়ি মারা হয়। সংবাদমাধ্যমে তাঁর আইনজীবী একথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, ইয়াররাহির বিরুদ্ধে একটি অবৈধ গান প্রকাশের অভিযোগ আনা হয়েছিল যা ইসলামী সমাজের নীতি ও রীতিনীতির পরিপন্থী বিরুদ্ধে। তার বিখ্যাত গান রুসারিতো (তোমার মাথার স্কার্ফ) প্রকাশের চার দিন পর তাকে আটক করা হয়।
গানের লাইনগুলির অর্থ ছিল, তোমার স্কার্ফ খুলে ফেলো, সূর্য ডুবছে। তোমার স্কার্ফ খুলে ফেলো, চুলকে উড়তে দাও। ভয় পেও না, আমার ভালোবাসা, হাসো, কান্নার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর। ২০২৩ সালের অগস্ট মাসে মেহেদীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তেহরানের বিপ্লবী আদালত তাঁকে দুই বছর আট মাসের কারাদণ্ড ও জরিমানার আদেশ দেয়। বন্দি অবস্থায় তাঁকে ৭৪ বার চাবুকের বাড়ি মারা হয়। তিনি তাঁর ১ বছরের সাজা ভোগ করেন। অবশেষে মুক্ত হয়েছেন।
গত ডিসেম্বরে ইরান সরকার একটি নতুন আইন জারি করে যেখানে বলা হয়, বাধ্যতামুলক হিজাব পড়ার বিরোধিতা করলে বেত্রাঘাত, কারাদণ্ড এমনকি মৃত্যুদণ্ড অবধি দেওয়া হবে। ইরানের এমন বহু শিল্পীকে এর আগেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। চলচ্চিত্র পরিচালক মোহাম্মদ রসুলফ, যাকে গত বছরের মে মাসে জাতীয় নিরাপত্তা অপরাধের জন্য আট বছরের কারাদণ্ড এবং বেত্রাঘাত করা হয়েছিল, এমনই জানা গিয়েছে। ইরানের এই অন্যায় শাস্তি প্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই।
এর আগে ইরানে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনি, যিনি তার মাথার স্কার্ফ সঠিকভাবে না পরার অভিযোগে গ্রেফতার হন এবং পুলিশের হেফাজতে মারা যান। যা নিয়ে গোটা ইরান ইত্তাল হয়ে ওঠে। হিজাব আইন এবং এটি প্রয়োগের নিষ্ঠুরতা নিয়ে দেশ-বিদেশে প্রতিবাদের ঝড়ও ওঠে।