আমুদরিয়া নিউজঃ কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় ব্রাত্য রবি-পার্থ। অভিযোগ, কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন দুই সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পার্থ প্রতিম রায়কে দলের ১১ তম বর্ধিত সভায় ডাকা হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এমই অভিযোগ ওই দুই নেতার। এমনকি তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কিংবা ফোন করে সভার বিষয়ে জানানো হয়নি বলে দুই নেতার দাবি। তবে তাদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্যদিকে এই নিয়ে কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসে ফের কোন্দলের জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের পর শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার ১১ তম বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, কোচবিহারের সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়া, মেখলি গঞ্জের বিধায়ক পরেশ অধিকারী, সিতাইয়ে রায়য়িকা সঙ্গীতা রায়, দলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুমিতা রায়, সহ সভাধিপতি আবদুল জলিল আহমেদ, প্রাক্তন বিধায়ক হিতেন বর্মন, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী শুচিস্মিতা দত্ত শর্মা সহ বিভিন্ন ব্লক সভাপতি,সহ সভাপতি, মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রীরা, বিভিন্ন শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব। এদিনের বর্ধিত সভায় ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে কিছু প্রস্তুতিমূলক আলোচনা হয়। এর পাশাপাশি আগামী জানুয়ারি মাসে বুথ, অঞ্চল, ব্লক নিয়ে বিধানসভা কেন্দ্রীক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। কবে, কোথায় সেই কনভেনশন করা হবে সেই বিষয়ে ব্লক নেতৃত্বের সাথে আলোচনা হয়। এদিনের সভায় জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রায় সমস্ত নেতৃত্ব উপস্থিত থাকলেও প্রাক্তন দুই জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং পার্থ প্রতিম রায়কে দেখা যায়নি। এই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বিষয়টি এড়িয়ে যান বলে জানা গিয়েছে। এদিনের সভার বিষয়ে অভিযোগের সুর পার্থ প্রতিম রায়ের গলায়।
তিনি জানান, তিন দলের ১০ টি বর্ধিত সভায় তিনি গিয়েছিলেন। তবে এদিনের সভায় তিনি যান নি। তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটিকে বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন। তবে এই বিষয়ে কোন উত্তর পাননি। আমন্ত্রণ না পাওয়ায় তিনি মিটিংয়ে যান নি বলে জানিয়েছেন। একই অভিযোগ প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। তিনি জানান, মিটিং এর কথা তিনি জানেন না। তাকে জানানো হয়নি বা ফোন করা হয়নি। এর আগে সব বর্ধিত সভায় তিনি যোগ দিয়েছিলেন। অন্যদিকে এই দুই নেতাকে দলীয় সভায় না ডাকার বিষয়টি নিয়ে কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেসে কোন্দল প্রকাশ্যে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দীর্ঘ কয়েক বছর তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পার্থ প্রতিম রায়ের মধ্যে বনিবনা ছিল না। এমনকি দুই জন একে অপরের ছায়া পর্যন্ত মাড়াতেন না। তবে সম্প্রতি পুরোনো দ্বন্দ্ব ভুলে গুরু শিষ্যের মধ্যে পুনর্মিলন হতে দেখা গেছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দুজনকে একসঙ্গে দেখা যাচ্ছে। ঠিক সেই সময় দলের গুরুত্বপূর্ণ সভায় দুই প্রাক্তন জেলা সভাপতিকে না ডাকার বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। তা নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।