আমুদরিয়া নিউজ : দক্ষিণ সুদানের একটি ঘাসজমিতে একটি ছোট পুকুরের জল বিষাক্ত হয়ে উঠেছে তেলে। পশুপালকেরা অবশ্য এই বিষাক্ত জল পশুদের পান করাচ্ছে না।
চিলহক পুওট, একজন পশুপালকের প্রধান জানান, ‘এই জল বিষাক্ত। এই জায়গায় তেল আছে। আর তেলের সাথে আছে বিষাক্ত রাসায়নিক’।
এই সম্প্রদায়ের একজন মহিলা জানাচ্ছেন, ‘আপনি যদি এই জল পান করেন তাহলে আপনি হাঁপাবেন আর কাশবেন। আমরা জানি এই জলে বিষ আছে, কিন্তু আমাদের আর কোথাও ভাল জল নেই। আমরা তেষ্টায় মরে যাচ্ছি’।
ডেভিড বোজো লেজু, একজন প্রাক্তন তেল বিশেষজ্ঞ জানাচ্ছেন যে, এলাকার বন্যাই এর জন্য দায়ি। জলের উৎসকে দূষিত করে তুলছে।
নজিরবিহীন বন্যার পর রাজ্যের বেশ বড় অংশ রয়েছে জলের তলায়, বিজ্ঞানীরা বলছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আরও খারাপ অবস্থার মধ্যে গিয়ে পড়েছে।
মিঃ বেজো লেজু বলছেন বন্যা একতি ‘বিপর্যয়’ আর ভুল ভাবে পরিচালিত তেলের সুবিধাগুলো দূষণ রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ‘সায়লেন্ট কিলার’।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, দক্ষিণ সুদান পৃথিবীর সবথেকে কমবয়সী দেশ। শুধু তাইই নয় পৃথিবীর দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি এই দষিণ সুদান, শুধুমাত্র তেলবিক্রির রাজস্বের ওপর এই দেশ নির্ভরশীল।
ইউনিটি স্টেট, যে তেল উৎপাদনকারি রাষ্ট্র, প্রতিবছরই বন্যায় বিপর্যস্ত হয়। কিন্তু ২০১৯ সালে বৃষ্টিতে পর্যুদস্ত করে ফেলেছিল এই দক্ষিণ সুদানকে। জমি আর বনভূমিকে গ্রাস করে নিয়েছিল সেই ভয়ঙ্কর বৃষ্টি আর বন্যা। বছরের পর বছর এই বন্যা এখানকার এঁটেল মাটিতে আটকে থাকে।
দক্ষিণ সুদানের সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল ২০২২। ডব্ল্যু.এফ.পি বা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম বলছে যে, এই রাষ্ট্রের ৪০ শতাংশ এখনও রয়েছে জলের তলায়।
মিঃ বোজও লেজু একটি বড় তেল কোম্পানিতে ৮ বছর হলও কাজ করছেন। এই কোম্পানিটি মালয়েশিয়া, ভারত, এবং চীনা তেল কোম্পানিগুলোর সাথে যৌথভাবে কাজ করছে। যেখানে দক্ষিণ সুদান সরকারের ৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে।
মিঃ বোজো লেজু বলেন, মাটির নিচ থেকে জল তোলার সময় তেলও উঠে আসে যা সবসময়ই হাইড্রোক্লোরাইড মিশ্রিত দূষিত জল। আর তা ঠিকঠাক দূষণমুক্ত করা হয় না।
দক্ষিণ সুদানের তাপমাত্রা এমনিতেই প্রচন্ড উত্তপ্ত, আর তা দিনদিন ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। সান্তা বারবারার ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিপদকেন্দ্রের পরিচালক, ডঃ ক্রিস ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘এই প্রচন্ড গরমের অর্থ হল, কিছুদিনের মধ্যেই চরমতম বৃষ্টিপাত হতে চলেছে আর এটা হচ্ছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য। উত্তাপ আর আর্দ্রতা অর্থ হতে যাচ্ছে এই দেশের কিছু অংশ আর বসবাসের যোগ্য থাকবে না’।