আমুদরিয়া নিউজ : হংকং-এর সদবি নিলামঘরে বুধবার গৌতম বুদ্ধের মরদেহের সঙ্গে যে রত্ন ছিল তা নিলাম হবে বলে দাবি করায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে। একদিকে প্রশ্ন উঠেছে, বৌদ্ধ ধর্মগুরু বুদ্ধের পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে ব্যবসা করা কি ঠিক হচ্ছে! অপরদিকে, নিলাম হতে চলেছে যাঁর উদ্যোগে সেই ক্রিস পেপে দাবি করেন, তাঁর পরিবারের কাছে এই রত্নগুলো রয়েছে। তাঁরা মন্দির বা জাদুঘরে দান করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেখানে জটিলতা তৈরি হয়। তাই তাঁরা নিলামকেই সবচেয়ে স্বচ্ছ উপায় বলে মনে করছেন।
এই ক্রিস কে! ইনি হলেন উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপে নামে একজন প্রত্নখননকারীর নাতির ছেলে। ১৮৯৮ সালে উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপে ভারতের উত্তরপ্রদেশের পিপরাওয়ায় একটি স্তূপ খনন করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রায় ২,০০০ বছর পুরনো বুদ্ধের হাড়ের টুকরো ও রত্নখচিত ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন বলে দাবি করেন। তাঁর দাবি অনুসারে, একটি খোদাই করা কলসে লেখা ছিল, এগুলো গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ। এই দাবি সারা বিশ্বে আলোড়ন ফেলে।
ইতিহাসবিদরা অনেকে মনে করেন, এই ধ্বংসাবশেষ বুদ্ধের শাক্য বংশ ও বিশ্বের বৌদ্ধদের ঐতিহ্যের অংশ। বর্তমানে হাড়ের টুকরো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারে সংরক্ষিত আছে। যেখানে এগুলো পূজা করা হয়। কিন্তু রত্নগুলো ব্রিটিশ পরিবারের ব্যক্তিগত সংগ্রহেই রয়েছে। তা এখন নিলামে তোলা হতে চলেছে।
ভারতের এক ইতিহাসবিদ জানান, বুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ কি শিল্পকর্মের মতো নিলাম করা যায়! এই নিলামের নৈতিক অধিকার কি আছে! অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, এগুলো মানুষের দেহাবশেষের অংশ, যা নিয়ে ব্যবসা করা ঠিক নয়।
উইলিয়ামের প্রপৌত্র ক্রিস পেপে দাবি করেন, তার পরিবার মন্দির বা জাদুঘরে দান করার চেষ্টা করেছিলে। কিন্তু সেখানে জটিলতা ছিল। তাই নিলামকেই সবচেয়ে স্বচ্ছ উপায় বলে মনে করা হয়েছে। মহাবোধি সোসাইটির এক মুখপাত্র জানান, বুদ্ধ আমাদের শিখিয়েছেন, অন্যের সম্পদ অনুমতি ছাড়া নেওয়া যাবে না। তাই এটা করার আগে বুদ্ধের ভক্তদের অনুমতি প্রয়োজন।
নিলাম কর্তৃপক্ষ দাবি করেছেন, রত্নের সত্যতা ও ইতিহাস যাচাই করা হয়েছে। তাঁরা দাবি করেন, নিলামের মাধ্যমে এটি সঠিক স্থানে সংরক্ষিত হবে।
প্রতিবেদক : অরিৎ চক্রবর্তী, আমুদরিয়া নিউজে ভিডিও এডিটিং ও কপিরাইটিং বিভাগে যুক্ত।

সদবিতে নিলামে উঠবে বুদ্ধের দেহাবশেষের রত্নরাজি, বিতর্ক তুঙ্গে
Leave a Comment