আমদরিয়া নিউজ :
ইচ্ছে, একাগ্রতা ও অধ্যবসায় থাকলে যে গরিব পরিবারের মুসলিম মেয়েও আকাশে উড়তে পারে, প্লেন চালাতে পারে তারই দৃষ্টান্ত হল, আমাদের বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে তৈয়বা আফরোজ। ২০১৯ সাল থেকে পাইলট হওয়ার লক্ষ্যে ট্রেনিং শুরু করেছিলেন। এখন তিনি ভারতের ডির্কেটর জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত একজন কমার্শিয়াল পাইলট।
তাঁর বাবা মতিউল হক বিহারের সারান জেলার মধুরা এলাকায় একটি রেশনের দোকান চালান। মা সামসুন্নেশা গৃহবধূ। এমন পরিবারে মেয়েটির তো বোরখা পরার কথা। ১৮ বছর হলেই যেন বিয়ে হয়ে যাবে এমন একটা মনোভাব রয়েছে ওই এলাকার অনেক পরিবারেই। কিন্ত, তৈয়বার ধাতই যে আলাদা।
তাই তিনি আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে, টাকা জোগাড় করে ২০১৯ সালে ভুবনেশ্বরের সরকারি বিমান প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যোগ দেন। সেখানে তিনি ২০০ ঘণ্টা ফ্লাইট চালিয়েছেন। ঝড়বৃষ্টি, প্রতিকূল আবহাওয়া, কুয়াশায় বিমান চালিয়েছেন। তার পরে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন। একের পর এক পরীক্ষা প্রায় ৩ বছর ধরে। ডিজিসিএ প্রশ্নপত্রে ৭০%+ স্কোর করেছেন। সফলভাবে ওড়ানো, নিরাপদে অবতরণে স্কোর করেছেন।
এর পরে ইন্দোর ফ্লাইং ক্লাবে ১২০ ঘন্টা প্রশিক্ষণ নেন। তার পরে ডিডিসিএ থেকে বাণিজ্যিক বিমান চালানোর লাইসেন্স পান।
একজন মুসলিম নারীকে বোরখা পরার কথা অনেকেই বলে থাকেন। মুসলিম মিররের সাংবাদিককে এক সাক্ষাৎকারে তৈয়বা সে কথা শুনে জবাব দেন, ককপিটের কোনও ড্রেস কোড নেই। ককপিটে যখন কেউ বসেন তিনি বিমান চালাতে পারেন কি না সেটা দেখা হয়, তাঁর পদবী বা উপাধি কি সেটা ভাবা হয় না।
একজন কমার্শিয়াল পাইলটের মাসে মাইনে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা থেকে শুরু। সেই টাকাটা কিন্ত তৈয়বার মূল লক্ষ্য নয়। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, প্রত্যন্ত গ্রামের একজন মুসলিম মেয়ে সব প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে প্লেন চালাতে পারে সেটাই সকলের সামনে তুলে ধরাটা তাঁর লক্ষ্য।
এখন তৈয়বার ফ্যানের অভাব নেই। তৈয়বা এখন বহ মুসলিম মেয়ের অনুপ্রেরণা। আমুদরিয়া নিউজও তৈয়বার আরও সাফল্য কামনা করে।